একটা সময় ছিলো যখন প্রচুর চিন্তা করার সময় পেতাম। কিন্তু চিন্তাগুলো কেনো জানি একইসাথে সুন্দর এবং depressed টাইপের হতো।
আমার গেমিং এর প্রতি ভালোবাসা ছোটাবেলা থেকেই। আব্বার বস ছিলো ইউনুস আংকেল। বাড়ি বরিশালে। একবার ওনার সাথে নবাবগঞ্জে দেখা করার সুযোগ হয়েছিলো আব্বা আমাকে সাইকেলে করে কারিতাসের অফিসে নিয়ে যাওয়ার সুবাদে। ইউনুস আংকেল একটু অন্য ধরনের মানুষ ছিলেন। সবকিছু আমার সঠিক মনে নেই, তবে ওনার কাছে একটা গেমিং কনসোল ছিলো। সম্ভবত ওটা Nintendo হবে। ওটা উনি সবখানে সাথে করে নিয়ে যেতেন মনে হয়। উনি আমাকে খেলতে দিয়েছিলেন। জীবনের প্রথম রঙিন হাই কোয়ালিটি গ্রাফিক্স (!!!) ভিডিও গেম খেলার অভিজ্ঞতা হয় Super Mario দিয়ে। (এর আগেও ভিডিও গেম খেলেছি, মেলা থেকে কেনা হ্যান্ড কনসোল 😂)
যাইইহোক, মানুষের কিছু personal traits থাকে। সঠিক জানিনা এসব কোথা থেকে আসে। সম্ভবত শিশু বয়সের adaptation power কিংবা মস্তিষ্ক ফাঁকা থাকার কারণে যা ঢুকে যায় তা স্থায়ী হওয়ার কারণে, হয়তো জীনেই এসব traits বংশ পরস্পরায় প্রবাহিত হয়। I don’t know! তবে আমার এরকম একটা traits হচ্ছে ভিডিও গেমের প্রতি দুর্বলতা। তবে সেটাকে কখনো নেশাতে পরিণত হতে দেইনি।
যাইইহোক, ২০১৫ তে একটা ছোটোখাটো জব পাই। তেমন কোনো কাজ থাকতোনা। কিন্তু খামোখা অফিসে বসে থাকতে হতো ১০ ঘন্টার মতো। যেটা খুবই বিরক্তিকর ছিলো। আমি এখনও এই বিষয়টা adapt করতে পারিনি। আমার মতে কাজ থাকলে অফিসে থাকবো অন্যথায় থাকবোনা, অন্যকোথাও অন্যকোনো কাজ করবো!
আমি বরাবরই MMO টাইপের গেমগুলা থেকে দূরে থাকতাম, কেননা এসব গেম addiction এমনকি obsession হয়ে যাওয়া খুব সহজ। যারা জানেননা MMO (Massively Multiplayer Online) গেম কোনগুলা তাদের জন্য বলে রাখা ভালো হালের PUBG, Fortnite এবং বুড়া Clash of Clans বা CoC হচ্ছে এই টাইপের কিছু গেমের উদাহরণ। এসব গেমকে আমার propaganda machines মনে হয়! গেমের ডেভেলপাররা প্রচুর revenue করে কিন্তু যারা খেলে তারা অকর্মা হয়ে যায়। আরও অনেক খারাপ প্রভাব আছে।
সে যাইহোক, আমি আমার অফিসে সময় কাটানোর উপায় খুঁজতে ব্যস্ত এমন এক সময় আমার এক বন্ধু এবং কিছু ছোটোভাই CoC খেলার পরামর্শ দেয়। Just for testing, শুরু করে দেই & it was working!
CoC তে কিছু troops কে ট্রেইন করাতে হতো এবং অন্যের বাড়িতে raid দিতে হতো। Troops train করাতে অনেক সময় লাগতো। MMO হওয়ায় Train করাতে দিয়ে গেম থেকে বের হয়ে আসা যেতো। কিন্তু ওই অফলাইন সময়টাতে আবার নিজের বাড়িতে অন্যরা raid দিতো।
এতোক্ষণ ধরে দীর্ঘ ভূমিকা লিখলাম। এবার আসি মূল বিষয়ে।
গেমিং এর পাশাপাশি আমার সবচেয়ে তীব্র যে trait সেটা হলো বিজ্ঞান বিশেষ করে মহাকাশবিজ্ঞান এর প্রতি দূর্বলতা! যারা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন তারা ভালো করেই সেটা জানেন। এবিষয়ে আমার কিছু গবেষণামূলক কাজও আছে। কিন্তু আপাতঃদৃষ্টিতে সেসব মূল্যহীন, কেননা অপ্রমাণিত বিষয়ে সিদ্ধান্তেই যখন আসা যায়না তখন গবেষণামূলক সিদ্ধান্ত আরও বেশি মূল্যহীন হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে পরে একদিন লেখার ইচ্ছা আছে! যদিনা অলসতা ভর করে।
আমি ব্ল্যাকহোল, থিওরি অফ রিলেটিভিটি, কোয়ান্টাম মেকানিক্স, হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপল, কনজারভেশন অফ ইনফরমেশন, প্যারালাল ওয়ার্ল্ড, মাল্টিভার্স – বিষয়গুলোর সাথে মোটামুটি ২০০৮ থেকেই পরিচিত দিনাজপুর গণকেন্দ্র পাঠাগার এ নিয়মিত যাতায়াত করার কল্যাণে। টিফিনের পর স্কুল পালিয়ে ওখানে যেতাম!
যাইহোক, সেদিন মনে হয় আমার ছুটির দিন ছিলো কিংবা আমি অসুস্থতার কারণে অফিসে যেতে পারিনি। তাই শুয়ে শুয়ে CoC খেলতেছিলাম। Troops ট্রেইন করতে দিয়ে আমি গেম থেকে বের হয়ে এসে আর্টিকেল পড়তেছিলাম। বিষয়বস্তু ছিলো “Simulation hypothesis”। আমার হঠাৎ তখন মনে প্রশ্ন জাগলো, আচ্ছা তাহলে আমি যখন গেমে থাকিনা তখন গেমের ট্রুপসগুলা আসোলে কি করে?
আপনারা হয়তো ভাবছেন যে এ আবার কেমন কথা?!? কিন্তু হ্যাঁ। আমার মাথায় ঠিক এই চিন্তাটাই এসেছিলো! (আমার Archer Queen কে নিয়ে টেনশন হতো তো প্রচুর… 😉)
Let’s dig in to this thing!
Simulation hypothesis অনুযায়ী আমরা আসোলে কোনো real entity নই! আমরা আসোলে কোনো higher dimension এর 3d projection! সোজা কথায় আমরা একেকজন ভিডিও গেমের একেকটা ক্যারেকটার (much like these troops in CoC) এবং আমাদের এই মহাবিশ্বটা একটা গেমের setup!
না এটা কোনো পাগলের প্রলাপ টাইপের কিছু না। এটা সাইন্স (sort of)!
ব্ল্যাকহোল এর প্রকৃতি বিশ্লেষণ করতে পারস্পারিক বিরোধপূর্ণ দুইটি থিওরির প্রয়োজন পড়ে: ১) থিওরি অফ রিলেটিভিটি এবং ২) কোয়ান্টাম মেকানিক্স। এবং ব্ল্যাকহোল কে এবং তদুপরি মহাবিশ্বকে সুক্ষভাবে বর্ণনা করতে এই দুই তত্ত্বের মিলন হওয়া আবশ্যক। এটা বর্তমান বিজ্ঞানের সবচাইতে বড়ো চ্যালেঞ্জ এবং আকাংখিত বিষয়। যাকে Theory of Everything বলা হচ্ছে। এখন ঘটনা হচ্ছে Black holes are really really weird things! Aren’t they? হুঁ। থিওরি অফ রিলেটিভিটির অনুমান অনুযায়ী প্রত্যেক ব্ল্যাকহোল এ সিংগুলারিটি বলে একটা জিনিশ আছে যাতে পুরো ব্ল্যাকহোল এর ভর এবং তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
ব্ল্যাকহোল আবার তাদের রোটেশন বা ঘুর্ণন অনুযায়ী দুইপ্রকারঃ ১) Non rotating বা অঘুর্ণনশীল ২) Rotating বা ঘুর্ণনশীল।
অঘুর্ণনশীল ব্ল্যাকহোল এর মেকানিজম তুলনামূলক ভাবে সিম্পল। কিন্তু ঘুর্ণনশীল ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অদ্ভুত। এদের সিংগুলারিটি না থেকে থাকে রিংগুলারিটি। দাঁড়ান। কিন্তু সিংগুলারিটি আর এবং রিংগুলারিটির তো মাত্রা বা ডাইমেনশন এক নয়! সিংগুলারিটি শুন্যমাত্রিক এবং রিংগুলারিটি দ্বিমাত্রিক, তাইতো? হ্যাঁ। তাহলেতো সমস্যা! একই অবজেক্টের তো দুইধরনের description থাকতে পারেনা। আবার স্টিফেন হকিং তার No hair theorem এ বলেছেন যে ব্ল্যাকহোল আসোলে ন্যাড়া। অর্থাৎ সকল ব্ল্যাকহোলই দেখতে প্রায় একইরকম! ঠিক যেমন ন্যাড়াদের ভিড়ে কে কেমন বোঝা যায়না তেমন। তিনি বলেছেন যে একটা ব্ল্যাকহোল এর মাত্র তিনটা বৈশিষ্ট্য থাকে mass বা ভর, charge বা আধান আর spin বা ঘুর্ণন।
Wait wait! তাহলে ব্ল্যাকহোলে যে বিভিন্ন প্রকার বস্তু পতিত হয় তাদের কি হয়? মানে পানির বোতল ফেললেও যা, আবার ময়লার বালতি ফেললেও তা? কিন্তু Conservation of information বা তথ্যের নিত্যতা নীতি অনুযায়ী তো তা হওয়া সম্ভব নয়! তথ্য তো হারিয়ে যেতে পারবেনা। তাহলে ঘটনা কি? আবার বলা হচ্ছে হকিং রেডিয়েশন এর মাধ্যমে ব্ল্যাকহোল ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং একসময় ভ্যানিশ হয়ে যায়!
মাথা ঘোরে… ঘুরুক!
এখান থেকেই শুরু হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপল এর। কি সেটা? হলোগ্রাম হচ্ছে 2d তে 3d এর প্রজেকশন। আমরা মাঝেমধ্যে সাইন্স ফিকশন মুভিগুলোতে দেখে থাকি বিজ্ঞানীরা AI বা অন্য কোনো যায়গার কাউকে তাদের সামনে প্রজেক্ট করছেন।
তো এর সাথে ব্ল্যাকহোল এর কি সম্পর্ক? আছে আছে।
আমরা যারা কম্পিউটার সাইন্সের লোক তারা হয়তো জানি যে কোনো ইনফরমেশন কন্টেইনারের তথ্য ধারণ ক্ষমতা তার ভলিউম বা আয়তনের উপর নয় বরং তার সার্ফেস এরিয়া বা ক্ষেত্রফলের উপর নির্ভর করে। এর মানে কি?
এর মানে হলো কোনো ব্ল্যাকহোলে পতিত কোনো বস্তুর তথ্য তার ইভেন্ট হরাইজনে সংরক্ষিত থাকে। এরই বা মানে কি?
আমরা হয়তো জানি যে আসোলে কোনোকিছুকে ব্ল্যাকহোলে নিক্ষেপ করলে আমরা কখনোই সেটাকে পুরোপুরি ব্ল্যাকহোলে ঢুকতে দেখবোনা। বরং মনে হবে সেটা ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হরাইজনে আটকে আছে! যা দেখবো তা হচ্ছে অসীম সময় ধরে রেডশিফটেড হতে। ডপলার ইফেক্ট। যদিওবা আসোলে বস্তুটি প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ব্ল্যাকহোলে পতিত হয়। কিন্তু আমরা তা দেখবোনা!
এর মানে হলো আমরা ব্ল্যাকহোলের 2d ইভেন্ট হরাইজনে একটা 3d অবজেক্ট দেখবো!
That’s it! হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপল!
এখন যদি এমন হয় যে এই পুরো মহাবিশ্বটাই আসোলে এরকম একটা ভার্চুয়াল প্রজেকশন? মানে কিছুটা Minecraft গেমের মতো। কম্পিউটারেই যদি একদম বাস্তব কোনোকিছু তৈরি করা যায় তাহলে এতো রিসোর্স খরচ করে বাস্তব জিনিস তৈরি করার দরকার কি?
মহাবিশ্বের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য!। যদি পুরো মহাবিশ্বকে একটা কম্পিউটারে তৈরি করা যায় তাহলে বাস্তবে তৈরি করার দরকার কি?
এটাই মূলত সিমুলেশন হাইপোথেসিস। এটা অনুযায়ী এই মহাবিশ্বটা আসোলে কোনো হায়ার এনটিটির তৈরি করা কম্পিউটার সিমুলেশন। ঠিক কম্পিউটার গেমের মতো! একটা গেমের ক্যারেকটাররা যেমন বুঝতে পারেনা যে তারা আসোলে রিয়েল নয় ভার্চুয়াল, তেমনি আমরাও বুঝতে পারিনা যে আমরা আসোলে রিয়েল নই, ভার্চুয়াল!
কিন্তু… সমস্যা আছে! পুরো মহাবিশ্বকে ফুল ডিটেইলস এ সিমুলেট করতে হলে মহাবিশ্বের সমান একটা কম্পিউটার লাগবে! যা একইসাথে ফিজিবল নয়, এবং বাস্তব নয়।
আচ্ছা বাস্তবতার সংজ্ঞা কি?
আমরা যখন অফলাইনে থাকি তখন আমাদের প্রিয় গেমের ক্যারেকটারগুলো কি করে???
Lydia, what are you doing now?!? 😍